অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের খাসকান্দি এলাকার ২০ বিঘা জমিনে চাষ হচ্ছে ক্যান্সার প্রতিরোধক সবজি ব্রকলি। এতে এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
আগে একেকটি ব্রকলি পাইকারি বিক্রি হতো ১০ থেকে ১৫ টাকায়। এখন একেকটি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। সিরাজদিখান কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বালুচর ইয়নিয়নের খাসকান্দিতে ব্যাপকভাবে চাষ শুরু হয়েছে। ইউরোপিয়ান লিভিয়া জাতের এ সবজি দেখতে প্রায় মাঠে ভিড় করে থাকেন লোকজন।
ব্রকলি চাষি শুকুর আলী বলেন, আমি বিগত কয়েক বছর যাবত ব্রকলি চাষ করে আসছি। এবারো আমি ২০ বিঘা জমিতে শীতকালীন সবজি ব্রকলি চাষ করেছি। ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। প্রচুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ব্রকলি আলটিমেট ক্যানসার ফুড। নিয়মিত ব্রকোলি খেলে ক্যানসার প্রতিরোধ হয়। ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ও ফাইবারে পরিপূর্ণ ব্রকোলি। যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ব্রকোলির মধ্যে রয়েছে সালফরফেন। যা ক্যানসার রুখতে উপকারী। লো ক্যালরির এই সবজি হার্ট ভালো রাখতেও উপকারী ।
সরেজমিনে ব্রকলি জমিতে গিয়ে দেখা যায়, কফির মতো প্রায় সব গাছেই ফল এসেছে। ব্রকলি আকারে ফুলকপির মতো হলেও ফুলগুলো সাদার পরিবর্তে পাতার রঙের মতো গাঢ় সবুজ। শীতকালীন এ সবজি ব্রকলি চাষ করা কৃষকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও জানান, তিনি একজন সবজি চাষি। চলতি শীত মৌসুমে উপজেলা কৃষি দপ্তরের কোন প্রকার সহায়তা ছাড়াই বীজ সংগ্রহ করে অক্টোবর মাসে বীজ তলায় ছিটিয়ে চারা তৈরি করেন।
এরপর চারা রোপণ করেন মূল আবাদি জমিতে। প্রতি বছরেই ভাল ফলন হওয়ায় চাষের পরিধি বছর বছর বাড়ানোর চিন্তা করছেন তিনি। আগের চেয়ে এবার প্রায় ২০ বিঘা জমিতে ব্রকলি আবাদ করেছেন। তার দেখাদেখি ব্রকলি চাষে অনেকের আগ্রহ দেখা দিয়েছে এলাকার অন্যান্য কৃষকের মাঝে। জানা যায় ফুলকপির মতোই চাষাবাদ করতে হয় ব্রকলি। তবে আগের তুলনাত এবার ফুলকপির চেয়ে অনেক কম চাহিদা ছিলো ব্রকলির।
তিনি আরও জানান, ব্রকলির বীজ অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বীজতলায় বপন করা হয়। পরে নভেম্বরের শুরুতে তা মূল খেতে রোপণ করা হয় । বীজ বপন থেকে ৮০-৯০ দিনের মধ্যে এতে ফুল আসে।এ খেতে স¤পূর্ণ নিরাপদ পদ্ধতিতে ব্রকলি চাষ করা হচ্ছে। ব্রকলির জমিতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জৈব সার ব্যবহার করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের অল্প কিছু জমিতে ব্রকলি চাষ হয়। ব্রকলি চাষে কৃষি অফিস থেকে কোনো অনুদান দেয়া হয় না। তবে তারা যদি কোনো পরামর্শ ও সহযোগিতা চান আমরা দিতে আগ্রহী।
উপজেলা সাবেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বদিউজ্জামান বলেন,ব্রকলি ক্রসিফেরী গোত্রের অন্তর্ভুক্ত শীতকালীন সবজি। এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফোলেট, আঁশ আছে। এতে Phytonutrientsথাকায় হৃদরোগ, বহুমূত্র এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। ব্রকলি জারণরোধী (antioxident)ভিটামিন এ এবং সি সরবরাহ করে কোষের ক্ষতি রোধ করে। মেধা বিকাশ, চোখের দৃষ্টি বৃদ্ধি, ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ, রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধিসহ মানবদেহের স্বাভাবিক পুষ্টি বজায় রাখে।
Leave a Reply